1
ডেস্ক: ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস ও ভাষা শহীদদের স্মৃতিকে চিরস্মরণীয় ও অমর করে রাখতে নির্মিত হয় শহীদ মিনার। বর্তমানে আমরা যে শহীদ মিনার দেখি সেটি শুরুতে এমন ছিলো না।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে নির্মিত ভাষা শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে প্রাথমিক স্মৃতিস্তম্ভ শুরুতে খুব একটা পরিকল্পনা ছাড়া ও কম সময়ে তৈরি করা হয়।

১৯৫২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্রদের উদ্যোগে বর্তমান শহীদ মিনারের পূর্ব-দক্ষিণ কোণে প্রাথমিক এ স্তম্ভটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের কাজ দেখাশোনা করেন জিএস শরফুদ্দিন। তিনি ইঞ্জিনিয়ার শরফুদ্দিন নামে পরিচিত। এ শহীদ স্মৃতিস্তম্ভের নকশা করেন বদরুল আলম। সাঈদ হায়দার ছিলেন এ দলে সংযুক্ত ব্যক্তিত্ব।
2

১০ ফুট উঁচু এবং ৬ ফুট চওড়া ভিত্তি বিশিষ্ট ছোট স্থাপত্যটির সঙ্গে ছিলো শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ লেখা একটি ফলক। ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে, ২২ ফেব্রুয়ারি শহীদ শফিউরের বাবা অনানুষ্ঠানিকভাবে শহীদ মিনারের উদ্বোধন করেন।

এরপর ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রতিবাদী আন্দোলনের মূর্ত প্রতীক এ শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ দৈনিক আজাদ পত্রিকার সম্পাদক  আবুল কালাম শামসুদ্দীন আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। ওই দিনই অবশ্য পুলিশ ছাত্র হোস্টেল ঘেরাও করে ও প্রথম শহীদ মিনারটি ভেঙে ফেলে।

পরবর্তীতে ঢাকা কলেজেও একটি শহীদ মিনার তৈরি করা হয়। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে সরকারের নির্দেশে তা ভেঙে ফেলা হয়।

3

১৯৫৬ সালে মুখ্যমন্ত্রী আবু হোসেন সরকারের সময়ে বর্তমান কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের স্থান নির্বাচন এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।

একবছর পর ১৯৫৭ সালে শিল্পী হামিদুর রহমান ও নভেরা আহমেদের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে সংশোধিত আকারে শহীদ মিনারের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। কাজ শেষ হয় ১৯৬৩ সালে। ১৯৬৩ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনের অন্যতম শহীদ আবুল বরকতের মা হাসিনা বেগম নতুন শহীদ মিনার উদ্বোধন করেন।

বায়ান্নোর ভাষাশহীদদের স্মরণে ও সম্মানে প্রতিবছর ২১শে ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় শহীদমিনারে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করেন হাজার হাজার বাঙালি। ২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা পাওয়ায় শহীদ মিনার কেবল বাঙালিদের জন্যই গৌরবের নয়, এটি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও সম্মানিত।
নোয়াখালীর পাতা ডেস্ক/ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬