

চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বাংলাদেশ সফরের সময় সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে অনেকগুলো বিনিয়োগ ও আর্থিক সহযোগিতার চুক্তি হয়েছে। কিন্তু দুটি দেশের মধ্যে ৮৮৫ কোটি ডলারের যে বাণিজ্য ঘাটতি, তা কমানোর ক্ষেত্রে এসব চুক্তি কতটা সহায়ক হবে?
এ সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে সরকারী পর্যায়ে ২৭ টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে এবং বেসরকারী পর্যায়েও ১৩ টি চুক্তি হয়েছে।
চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার হলেও দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ বেশ বড়। গত অর্থবছরে যেটি ছিল টাকার অংকে প্রায় ৮৮৫ কোটি ডলার।
প্রায় তিন দশক পর চীনের কোন রাষ্ট্রপ্রধানের এই সফরের সময় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য। কিন্তু এর ফলে বাংলাদেশের সাথে চীনের যে বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে, তার কতটা পরিবর্তন হতে পারে?
ব্যবসায়ী ও বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সফরের পর এক্ষেত্রে খুব দ্রুত বড় ধরণের পরিবর্তন হবে বলে মনে হয় না, তবে মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদে কিছু ইতিবাচক ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

“অবকাঠামো খাতে চীন যে বিনিয়োগগুলো করছে – সেটা বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াবে এবং তার ফলে আমাদের এখানের বিনিয়োগকারীরা আরো প্রতিযোগিতা-সক্ষম মূল্যে রপ্তানি করতে পারবে”। বলছিলেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. মুস্তাফিজুর রহমান।
ব্যবসায়ীদের সংগঠণ এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি আব্দুল মাতলুব আহমেদ বলছেন, চীনের ব্যবসায়ীদের সাথে তাদের যেসব চুক্তি হয়েছে সেখানে অধিকাংশই রপ্তানমুখী।
তবে তার মতে. চীনে সরাসরি রপ্তানীর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাঁধা রুলস অফ অরিজিন বা উৎপাদন দেশ হিসেবে স্বীকৃতির সমস্যা। বর্তমান নিয়মে চীন পণ্যের মোট ৪০ শতাংশ উৎপাদিত হলে তাকে স্বীকৃতি দিচ্ছে। মি. আহমেদ বলছেন, তারা এটিকে কমিয়ে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী ২৫ শতাংশ করার কথা বলেছেন।
পাশাপাশি চীনের বিভিন্ন পণ্য বাংলাদেশে উৎপাদনের বিষয়েও তারা আগ্রহের কথা জানিয়েছেন।
“ওদের ব্র্যান্ডেড পণ্য যদি তারা বাংলাদেশে উৎপাদন করে এবং সেটি আমরা চীন, ভারত এবং বিশ্বের যে ৩৯ টা দেশে আমরা শুল্কমুক্ত সুবিধা পাই সেখানে পাঠাতে পারি। এটা করতে পারলে আমাদের বাণিজ্য ঘাটতি কমবে। তবে সেটা করার জন্য যে বিনিয়োগ লাগবে, সেই বিনিয়োগের নমুনা কিন্তু আমরা চীনের প্রেসিডেন্টের সফরে পেয়েছি”।

মি. আহমেদ বলছেন, চীন যে বিনিয়োগ করছে, তার ফলে অন্যান্য বড় দেশও আস্থা পাবে এবং বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য উদ্যোগী হবে বলে তিনি মনে করেন।
যদিও চীন বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৯০ শতাংশ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়, তবে এসব পণ্যের খুব কমই বাংলাদেশে উৎপাদিত হয়।
অর্থনীতিবিষয়ক সাংবাদিক শওকত হোসেন বলছিলেন, চীনে রপ্তানী বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নিজেদের সক্ষমতা তৈরির দিকে নজর দিতে হবে।
“এই সফরের পরে যদি আমাদের উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির কোন সুযোগ পাওয়া যায়, তারা যদি রপ্তানী প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলগুলোতে বিনিয়োগ করে অথবা অন্য কোন দেশ যদি চীন প্লাস ওয়ান নীতিতে বাংলাদেশকে চীনের একটি বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করে তাহলে বাংলাদেশের জন্য একটি সুবিধা হবে”। বলেন মি. হোসেন।

দুদেশের কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, মি. শি-র সফরে চীন বাংলাদেশকে ২৪ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের ঋণ দেয়ার বিষয়ে চুক্তি হয়েছে। এর বেশিরভাগই অবকাঠামো খাতে।
গবেষক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলছিলেন, চুক্তির খুটিনাটি বিষয়গুলো এবং সেগুলো বাংলাদেশ কিভাবে বাস্তবায়ন করছে সেটিও বাণিজ্য ঘাটতি কমানো এবং বিনিয়োগের সুফল নেয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
“কি সুদে ঋণ দিচ্ছে, শর্ত কি, প্রকিউরমেন্টের নীতি বা রিপেমেন্ট পিরিয়ড কি এটি একটি বিষয়, আর বাংলাদেশের বাস্তবায়ন সক্ষমতাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটি যদি সাশ্রয়ীভাবে, সময়মত এবং সুশাসনের সাথে করতে পারি তাহলেই বাংলাদেশ এটা থেকে সর্বোচ্চ লাভ পাবে” – বলেন ড. রহমান।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
- কাজী অফিস নোয়াখালী চৌমুহনী
- চাটখিলের শাহাপুরে আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন
- বন্ধু জুতা সেলাই করছেন, পাশে বসে গল্প করছেন মাশরাফি
- গতকাল থেকে খালেদা জিয়ার জ্বর
- জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জন সমন্বয়ে প্রকাশ্যে পানের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান !
- নোয়াখালীতে মহিলা বিষয়ক দপ্তরে জাতীয় পতাকা না করায় তদপ্ত সাপেক্ষে রাষ্ট্রীয় আইনে বিচার করার অনুরোধ
- নোয়াখালীতে পূজামন্ডপ পরিদর্শন ও অনুদান প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী
- ব্র্যাক এর সহযোগীতায় নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত
- মেডিকেল সেন্টার উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে শুরু, ভবিষ্যতে এটি নোবিপ্রবির আধুনিক হেলথ রিচার্স সেন্টারে উপনিত হবে – প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফারুক উদ্দিন
- বিআরটিএ নির্দেশনায় সুশৃঙ্খলভাবে পথ চলার আহবান করেন: জেলা প্রশাসক ও প্রকৌশলীগন
Leave a Reply