13619807_1727636974157810_5165714786818836357_n copy

আনোয়ারুল হক আনোয়ার:

সিরিয়া যুদ্বের তিন বছর পার হয়ে গেল। শুরুতে আইএস অনেকটা সুবিধাজনক অবস্থানে থাকলেও ইদানিং সিরিয়া ও ইরাকে আইএস এর বিদায় ঘন্টা বাজতে শুরু করেছে। উল্লেখ্য, আমেরিকা, সৌদী আরব, ইসরাইল, তুরস্ক, কাতার ও আরব আমিরাত আইএসকে প্রশিক্ষন, অস্ত্র সরবরাহ, অর্থ এবং চিকিৎসা প্রদান করে আসছে। অপরদিকে বাসার আল আসাদ সরকারকে সহযোগীতা করছে ইরান ও লেবাননের দূর্ধর্ষ জেহাদী সংগঠনহিজবুল্লাহ। সিরিয়ার সাথে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা চুক্তি থাকার সুবাদে বিদ্রোহী দমনে শেষতক বাসার আল আসাদ পুতিনকে আমন্ত্রন জানান।

এমনিতেই ভ্লামিদির পুতিন আমেরিকাসহ কয়েকটি দেশের উপর বেজায় ক্ষুব্দ। ফলে বন্ধু দেশের অনুরোধে বিদ্রোহী নির্মূলে কোমর বেঁধে যুদ্বে নেমেছে রাশিয়া। ফলাফলও বাসার সরকারের অনুকুলে। মাত্র চার মাসের ব্যবধানে বিদ্রোহীদের ৭০ শতাংশ শক্তি বিনাশ করে দেয় রুশ বাহিনী।


রাশিয়ার জঙ্গী বিমানকে ভূপাতিত করার জের ধরে তুরস্ক-রাশিয়া উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এ বুঝি যুদ্ব শুরু হয়ে গেল। তখন পশ্চিমারা তুরস্কের পক্ষে থাকলেও তাদের উপর আস্থা না রেখে শেষতক তুরস্কের প্রেসিডেন্ট তাইয়্যেব রজব এরদোগান বিমান ভূপাতিত করার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে রাশিয়ার সাথে পূণরায় সম্পর্ক স্থাপন করেন।

শুধু তাই নয়, বিদ্রোহীদের দমনে তুরস্কের বিমানঘাঁটি ব্যবহারের অনুমতি প্রদানের ঘোষনাও দেন তুরস্ক সরকার। অপরদিকে লেবাননের হিজবুল্লাহ যোদ্বারা সিরিয় সরকারের পক্ষে যুদ্বে অর্জিত সাফল্যের বিষয়টিও অনেকের মাথাব্যাথা শুরু হয়। আমেরিকা ও সৌদী আরব বাসার আল আসাদকে উৎখাতে যথাসাধ্য চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। অপরদিকে রাশিয়া-ইরান যে কোন মূল্যে বাসার আল আসাদ সরকারকে ক্ষমতায় রাখতে বদ্বপরিকর। সিরিয়ায় বাসার আল আসাদ সরকার টিকে গেলে মধ্যপ্রাচ্যের রাজতন্ত্রের জন্য মহা হুমকি সৃষ্টি ছাড়াও ইসরাইলের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে।

এটাই সৌদী -আমেরিকা জোটের দূশ্চিন্তার কারন। অপরদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লামিদির পুতিন আমেরিকার উপর বেজায় ক্ষিপ্ত। ইউক্রেন ইস্যু এবং রাশিয়ায় বিগত নির্বাচনে আমেরিকা কর্তৃক ভ্লামিদির পুতিনের বিরোধিতাই এখন আমেরিকার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে সিরিয়ায় বাসার আল আসাদ সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে যে কোন কঠোর পদক্ষেপ গ্রহনে পিছপা হবে আত্নবিশ্বাসী ভ্লামিদির পুতিন।


পরিশেষে বলতে হচ্ছে, সিরিয়া যুদ্বে আমেরিকা হেরে গেলে মধ্যপ্রাচ্যে তার বিশ্বস্থতা হারাবে এবং ইসরাইলের জন্য নতুন নতুন সংকট সৃষ্টি হবে। অপরদিকে সিরীয় সরকার জয়ী হলে বিশ্বে রাশিয়ার গুরুত্ব আরো বৃদ্বি পাবে। এটাই বাস্তবতা।

লেখক:  সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার ও ব্যুরো চীফ দৈনিক ইনকিলাব এবং আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক