13467728_864853106960263_1534849657_o

ধর্ষণের শিকার হয়ে স্কুলপড়ুয়া ১০ বছরের শিশুটি কাতরাচ্ছিল নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে। দরিদ্র মা–বাবা এক ব্যাগ রক্তের জন্য পাগলের মতো ছুটোছুটি করেছেন। কিন্তু না পেয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলেন তাঁরা। ঠিক তখনই এগিয়ে এলেন পুলিশের দুই সদস্য। তাঁরা তাৎক্ষণিকভাবে দুই ব্যাগ রক্ত দিয়ে বাঁচালেন ওই শিশুকে।

সোমবার নোয়াখালী সদর উপজেলায় এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ধর্ষণের শিকার শিশুটি একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। তাকে রক্ত দিয়ে জীবন বাঁচানো দুই পুলিশ সদস্য হলেন কনস্টেবল নাছির উদ্দিন ও নায়েক ওমর বিজয় চাকমা।

13509285_864853143626926_1751625372_o
শিশুটির মা সাংবাদিকদের বলেন, তাঁর বাড়ির পাশেই চাচাশ্বশুর মো. মোস্তফার বাড়ি। আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তার মেয়ে বাসা থেকে বের হয়। তখন মোস্তফা তাঁর মেয়েকে কথা আছে বলে বাড়ির পুকুরপাড়ে নিয়ে যান। সেখানে তাকে ধর্ষণ করেন মোস্তফা। এ সময় মেয়ের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে গেলে মোস্তফা পালিয়ে যান। পরে মেয়েকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মেয়েকে হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসকেরা জরুরি ভিত্তিতে দুই ব্যাগ রক্ত জোগাড় করতে বলেন। কিন্তু অনেকক্ষণ খোঁজাখুঁজি করে রক্ত জোগাড় করা যায়নি। এ সময় হাসপাতালে উপস্থিত এক গণমাধ্যমকর্মী জেলা পুলিশ সুপারকে অবহিত করেন। পরে পুলিশ সদস্য নাছির ও ওমর শিশুটিকে রক্ত দেন।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ধর্ষণের শিকার হয়ে শিশুটি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। তবে শিশুটির সফল অস্ত্রোপচার হয়েছে। আস্তে আস্তে সে সুস্থ হয়ে ওঠবে বলে আশা করা হচ্ছে।
জানতে চাইলে রক্তদাতা পুলিশ কনস্টেবল নাছির উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘রক্ত দিতে পেরে ভালো লাগছে। আমি জীবনে কখনো কল্পনাও করিনি, এভাবে কারও জীবন বাঁচানোর জন্য রক্ত দিতে পারব।’
অপর পুলিশ সদস্য নায়েক ওমর বিজয় চাকমা বলেন, ‘শিশুটিকে রক্ত দিতে পেরে খুবই ভালো লাগছে।’
সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, ধর্ষণকারীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।