Noakhali Roanu News 24-06-2016 Images (2)

ফিরোজ উদ্দিন, হাতিয়া প্রতিনিধি:
নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্র্ণিঝড় রোয়ানু’র আঘাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে উপকূলের বাসিন্দারা।
হাতিয়ার নলচিরা, চরঈশ্বর, সুখচর তমরুদ্দিন, এবং নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নে প্রবল জোয়ারের ¯্রােতে বেড়িবাঁধ ও রাস্ত ভেঙে গেছে।

Noakhali Roanu News 24-06-2016 Images (1)
ফলে ওই ইউনিয়নগুলোর প্রায় সাত কিলোমিটর বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হয়ে ১০টি গ্রাম সূম্পর্ণ প্লাবিত হয়। এতে নিম্নাঞ্চলের ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন।
পাশাপাশি ঝড়ো বাতাস ও প্রবল জোয়ারে পাঁচ শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়। এতে সহায় সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন দরিদ্র চরাঞ্চলবাসী।
এদিকে, রোয়ানু’র আঘাতে আশ্রয় শিবিরগুলোতে ঠাঁই নেওয়া হাজার হাজার মানুষ তাদের বসত ভিটাতে ফিরে গেছেন। সেখানে গিয়ে তারা খুঁজে বেড়াচ্ছেন হারিয়ে যাওয়া মূল্যবান জিনিসপত্র। আবার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন তারা।
উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, “বর্তমান অর্থ বছরে হাতিয়ার নলচিরা ও চরঈশ্বর ইউনিয়নে নয় কিলোমিটার নতুন বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য টেন্ডার সম্পূর্ণ করে কাজ চলছে। চলতি মাসের ৩০ তারিখের মধ্যে ঠিকাদারদের কাজ শেষ করার কথা রয়েছে।

Noakhali Roanu News 24-06-2016 Images (3)
ইতোমধ্যে বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ প্রায় ৯০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু’র ফলে নতুনভাবে নির্মিত বেড়িবাঁধের অধিকাংশ মাটি জোয়ারের পানিতে ধসে গিয়েছে।
কোথাও কোথাও এ বেড়িবাঁধ সমতল ভূমিতে পরিণত হয়। বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ পুনরায় মেরামত না করলে চলতি দুর্যোগ মৌসুমে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু হাসনাত মো. মাইনুদ্দিন জানান, “তারা প্রাথমিকভাবে একটি ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরি করেছেন। এতে প্রায় সাত কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়ি, অর্ধ বিধ্বস্ত হয়েছে নয় হাজার ঘরবাড়ি।
এছাড়াও ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ফসলের পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ গবাদি পশুও মারা গেছে। ফসলের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি নিরূপণে কাজ করছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।
জেলা প্রশাসক বদরে মুনির ফেরদৌস বলেন, “জোয়ারের পানিতে হাতিয়ার চরাঞ্চলের বেড়িবাঁধ সমূহ ভেঙে যাওয়ার বিষয়ে আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে খোঁজ খবর নিচ্ছি। বেড়িবাঁধ সংস্কারের জন্য দ্রুত যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হওয়ায় যাদের ঘরবাড়ি ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কৃষি বিভাগের মাধ্যমে তাদের তালিকা করা হচ্ছে। তালিকা অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করা হবে বলেও তিনি জানান। এদিকে ওই ইউনিয়নগুলোর স্থানীয়রা বিধ্বস্থ বেড়িবাঁধগুলো দ্রুত মেরামতের জন্য দাবি জানিয়েছেন সংশিষ্ট প্রশাসনের নিকট। দ্রুত মেরামত করা না হলে হলে চলতি বর্ষা মৌসুমে জোয়ারের পানি ঢুকে পুনরায় ক্ষতির আশংঙ্ক করছেন তারা।