IMG_0582

নিজস্ব প্রতিনিধি:
নোয়াখালীতে গৃহবধুকে বিবস্ত্র করে মাথা ন্যাড়া করে পিটিয়ে গ্রাম ছাড়া করেছে মাতব্বররা। থানায় মামলা করে মাতব্বরদের ভয়ে আবার মামলা তুলে নিলো ভুক্তভোগী পরিবার।

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের রৌশন গাজী বাড়ির গৃহবধু লাভলী আক্তার। গেল মাসে এক সালিশে লাভলীর পক্ষ হয়ে জরিমানার বিশ হাজার টাকা নিয়ে দেয় লাভলীকে। এ টাকাই কাল হয়ে দাঁড়ায় গরীব লাভলীর জীবনে। মাতব্বররা ভাগ বসায় এ টাকায়। টাকা দিতে অস্বীকার করলে দুশ্চরিত্রা আখ্যা দিয়ে শুরু করে নির্যাতন। কয়েকদফা হামলা করে বৃদ্ধ বাবা, মা ও লাভলীকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এ ঘটনায় ১৫ মার্চ বেগমগঞ্জ মডেল থানায় লাভলী বাদী হয়ে মামলা করে মাতব্বরদের বিরুদ্ধে। মাতব্বরদেরদের ভয়ে লাভলী আবার মামলা তুলে নিতে বাধ্য হয়।

গ্রম্য মাতব্বর সোবহান, গফুর ও কাবিল মাস্টার রায় দেয় সমাজকে করতে হবে শুদ্ধ। গেল বৃহস্পতিবার সকালে লাভলীর বাড়ির উঠানে শুরু হয় বিচারকার্য। প্রথমে লাভলীকে পিটিয়ে বিবস্ত্র করে বেচু, সোহেল ও কামরুল মাথা ন্যাড়া করে দেয়। এ সময় নবী ও জসিম ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়। গুরুতর আহত অবস্থায় লাভলীকে গ্রাম ছাড়া করে দেয় মাতব্বরা।

এ সময় থানায় কোন মামলা করবেনা এ মর্মে স্ট্যাম্পে লাভলী ও তার বাবা নুরুল হকের মুছলেকা নিয়ে নেয়।

লাভলীর বাবা বলেন যদি মামলা তুলে না নেই তাহলে আরও মারধর করবে। ঘরে আগুন লাগিয়ে দিবে এভাবে হুমকি দিলে ভয়ে মামলা তুলে এনে কাগজ মাতব্বর সোবহান ও গফুরের হাতে দেই।

লাভলীর মা আমার মেয়ে মাতব্বরদের টাকা না দিলে গায়ের জামাকাপড় খুলে মারধর করে মাথার চুল কেটে দেয় এবং এসবের ফটো তুলে নেয়।
ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল বলেন মাতব্বররা লাভলীকে সামাজিকভাবে শাস্তি দিয়ে তার মাথার চুল কেটে দেয়। এটা দু:খজনক। অপরাধ থাকলে আইন শাস্তি দিবে। এভাবে শাস্তি দেয়ার অধিকার কারও নেই।

সহকারী পুলিশ সুপার (বেগমগঞ্জ সার্কেল) শিকদার হাসান ইমাম বলেন এখনো এ বিষয়ে থানায় কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ আসলে আইনানুগভাবে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জিকেআরটি/নোয়াখালীর পাতা ডেস্ক/০৩ এপ্রিল ২০১৬