Still0211_00001

অবশেষে স্বপ্নপূরণ হলো নোয়াখালীবাসীর। ১৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত, মুছাপুর ক্লোজার নামে বাঁধটি এখানকার মানুষের মাঝে এনে দিয়েছে স্বস্তি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সঠিকভাবে প্রকল্প শেষ হওয়ায়, প্রাণ ফিরে পাবে এ অঞ্চলের কৃষি। পাশাপাশি তৈরি হবে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ। ছোট ফেনী নদীর ভাঙনে নিঃস্ব হয়েছে অসংখ্য পরিবার। নদীতে বিলীন ঘর-বাড়ি, ফসলের জমি, ঐতিহাসিক নিদর্শন। এই বিপদের হাত থেকে স্থানীয়দের বাঁচাতে কয়েক দফা চেষ্টা চলে । কিন্তু সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়। অবশেষে হার মানে নদীর স্রোত। ১৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে, মুসাপুর ক্লোজার নামে একটি বাঁধ। স্থানীয়রা বলছেন, এই বাঁধের ফলে উপজেলার চরাঞ্চল রক্ষা পাবে ভাঙনের হাত থেকে। সেচ সুবিধা সৃষ্টির পাশাপাশি জমিতে লবণ পানি প্রবেশও ঠেকানো যাবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, এই বাঁধের ফলে ১ লাখ ৩০ হাজার হেক্টর জমি রক্ষা পাবে লবণাক্ত পানির হাত থেকে। এই বাঁধকে কেন্দ্র করে এলাকায় মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে বলেও আশাবাদী স্থানীয়রা। পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন- এ প্রকল্পে খরচ হয়েছে ২শত কোটি টাকা। কিন্তু প্রতি বছর বাড়তি ফসল উৎপাদন হবে ৪শত কোটি টাকার। এছাড়া ৮ হাজার একর জমি পুনরুদ্ধার করা যাবে। পানি উন্নয়ন বোডর্, নোয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী রিয়াজুল হাসান বলেন- নদী থেকে জোয়ারের সাথে পলি এসে নোয়াখালীর ১০৩ কিলোমিটার খাল ভরাট হয়ে জলাবদ্ধতা দেখা দিত। এখন জলাবদ্ধতা থেকে স্থায়ীভাবে মুক্তি মিলবে।
নির্মান কাজ শুরু হয় ২০১৩ সালে এবং শেষ হয় ২০১৫ সালে। বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘ ও ব্যয়বহুল মছাপুর ক্লোজার নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ছোট ফেনী নদীর উপর। এক কিলোমিটারেরও বেশি দীর্ঘ মুছাপুর ক্লোজার পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের অধীনে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত। শুষ্ক মৌসুমে নদীর উভয় তীরে প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ সুবিদা প্রদান করা যাবে। ফলে শস্যের নিবিড়তা ১.৫৫ থেকে বেড়ে ২.২০ এ দাড়াবে এবং বছরে অতিরিক্ত খাদ্য উতপাদন হবে ২.৫০ লক্ষ মেট্রিক টন। যার বাজার মূল্য প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। এছাড়াও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, ভূমি পুনরুদ্ধার ও নদী ভাঙ্গন রোধ হবে। ছোট ফেনী নদীতে প্রায় বার মাস মিঠা পানির মাছ চাষ করা যাবে। নদীও পলি পড়ে ভরাট হবেনা। জমির পানি নামতে আর অসুবিধা হবেনা।