নোয়াখালীর পাতা ডেস্ক:: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের পোদ্দার বাড়ির হত দরিদ্র রিক্সা চালকের ৩ মাসের অন্ত:সত্ত্বা কিশোরী মেয়ে বিবি ফাতেমা বেগম ওরপে মুন্নি (১৭) কে বখাটে যুবক বিয়ের প্রলোভনে নির্জাতনে খুন করছে। খুনের ৩দিন পরও থানায় মামলা হয়নি। রিক্সা চ্লাক শাহাব উদ্দিন যাতে নমামলা করতে না পারে ঘটনার পর থেকে বখাটে যুবক তার ভাড়া টিয়া অস্ত্রদারী নিয়ে পাহারা রেখেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গত সোমবার সকাল ৮টায় রিক্সা চালকের স্ত্রী নুরজাহান বেগম নিহত কিশোরীকে ঘরে রেখে অপর শিশুদেরকে পাশের বিদ্যালয় নিয়ে যায়। এই সুযোগে ওই বখাটে যুবকের নেতৃত্বে তার ৩-৪ জন বখাটে যুবক ঘরে ঢুকে নিহত কিশোরীকে কিল, ঘুষি ও তল পেটে লাথি দিলে চিৎকার করে মারা গেলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। নুরজাহান বেগম বসত ঘরে ঢুকে তার মেয়েকে মৃত দেখে চিৎকার করলে পাশের লোকজন ছুটে যায়। এই ব্যাপারে স্থানীয় চেয়ারম্যান আবদুল জলিলকে অবহিত করলে থানায় জিডি ও ময়নাতদন্ত ছাড়াই তার নির্দেশে একইদিন সন্ধ্যার পর ওই বখাটে সন্ত্রাসীরা রিক্সা চালকের অনুপস্থিতে নিহত কিশোরীকে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে দাপন করেছে।
স্থানীয়রা জানান, রিক্সা চালক শাহাব উদ্দিনের ৬ ছেলে ও ২ মেয়ের মধ্যে নিহত কিশোরী বড়। স্থানীয় মাধ্যমিক বিদ্যালয় নিহত কিশোরী সপ্তম শ্রেনীর পড়া-লেখার পর হত দরিদ্র রিক্সা চালকের অভাব অনটনে পড়াইতে আর এগিতে পারেনি। গত ৬ মাস আগ থেকে শাহাব উদ্দিন ঢাকা রিক্সা চালিয়ে মাঝে মাঝে বাড়িতে এসে পরিবার পরিজনকে টাকা দিয়ে যায়। তার স্ত্রী নুরজাহান নিহত কিশোরীকে ঘরে রেখে অপর শিশুদের নিয়ে বিদ্যালয়ে যায়। রিক্সা চালক ও তার স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে গত ১ বছর আগ থেকে একই গ্রামের আদা কি:মি: দূরে স্থানীয় বর্তমান ক্ষমতাশীন দলের যুবলীগ বখাটে ক্যাডার পাশে দায়ী মিয়ার বাড়ির পাখিকে নিয়ে নিহত কিশোরীর ঘরে আসা যাওয়া করে। এক পর্যায়ে কিশোরীকে বিয়ের প্রলোভনে তার বাড়িতে নিয়ে প্রেম গড়ে তুলে। দায়ী মিয়ার বাড়ি পাখি (১৬) দিনে ও সন্ধ্যার পর গত ১ বছর ধরে নিহত কিশোরীকে ধর্ষকের বাড়িতে নিতে সহযোগীতা ও করে। বখাটে লম্পট যুবক বিয়ের প্রলোভনে তাদের বসত ঘরে কিশোরীকে ১ বছর ধরে ধর্ষন করায় ৩ মাসের অন্ত:সত্ত্বা হয়ে যায়। ঘটনার ১০দিন আগে রিক্সা চালক বাড়িতে এলে তার কিশোরী মেয়ে অন্ত:সত্ত্বা দেখে তার স্ত্রীর কাছে জানতে চাই। স্ত্রী জানায়, পাশের বাড়ির পাখির মাধ্যমে ওই বখাটে যুবকের বাড়িতে নিয়ে বিয়ের প্রলোভনে মেয়েকে অবৈধ ধর্ষনে অন্ত:সত্ত্বা ঘটায়। পরে রিক্সা চালক ও তার স্ত্রী নুরজাহান পাশের বাড়ির লোকজনকে তার মেয়ের ব্যাপারটি জানিয়ে বখাটে যুবককে নিহত কিশোরীকে বিয়ে করার প্রস্তাব করলে অসম্মতি জানিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে যায। সোমবার সকাল ৮ টায় নুর জাহান বেগম কিশোরীকে বসত ঘরে রেখে অপর শিশুকে বিদ্যালয়ে নিয়ে যায়। এই সুযোগে ওই বখাটে যুবকসহ ৩-৪ জন সন্ত্রাসীরা বসত ঘরে ঢুকে কিশোরীকে বিয়ের প্রলোভনে তাদের সাথে যেতে প্রস্তাব দিলে কিশোরী রাজি না হওয়ায় তাকে কিল,ঘুষি ও তল পেটে লাথি দিয়ে খুন করে পালিয়ে যায়। নিহত কিশোরীর পিতাকে তার মা সকালে টেলিফোন করলে বাড়িতে আসার আগেই ধর্ষক ওই বখাটের নেতৃত্বে ৫-৬জন সংঘবদ্ধ হয়ে প্রভাব খাটিয়ে সন্ধ্যার পর মামলা ও ময়না তদন্ত ছাড়াই ধাপন করা হয়েছে। নিহত কিশোরীর পিতা শাহাব উদ্দিন গতকাল বুধবার বিকালে এই প্রতিবাদকের অফিসে এসে কান্না জড়িত কণ্ঠে জানান, আমি গত ৬ মাস ধরে ঢাকায় রিক্সা চালাই। আমার স্ত্রী নুরজাহান বেগম আমার মেয়ে নিহত কিশোরীকে ঘরে রেখে অপর শিশুদের সকালে বিদ্যালয়ে নিয়ে যায়। এই সুযোকে পাশের দায়ী মিয়ার বাড়ির পাখি ও অপর লোকজনের যোগসাজশে ওই এলাকার ক্ষমতাশীন দলের বখাটে যুবককে আমার বাড়িতে এসে আমার নিহত কিশোরীকে তাদের বাড়িতে নিয়ে বিয়ের প্রলোভনে গত ১ বছর ধরে ধর্ষন করাই সম্ববত অন্ত:সত্ত্বা হয়ে যায়। বখাটে যুবকের এই অবৈধ অনৈতিক কাজ পাশের বাড়ির লোক যেন্ আমাকে গায়েল করতে তাকে সহযোগীতা করছে। আমার স্ত্রী ও স্বজনেরা চেয়ারম্যানকে নিহত কিশোরীর ব্যাপারে জানানো হয়। চেয়ারম্যান থানায় জিডি ও ময়নাতদন্ত ছাড়াই বখাটেদের আমার অনুপস্থিতিতে কিশোরীকে ধাপন করা হয়েছে। আমি বাড়িতে আসার পর থানায় ও কোর্টে মামলা করতে বাধা ও প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে ৪-৫ জন প্রভাবশালী বখাটে যুবকেরা বাড়ির চতুর দিকে পাহারা রেখেছে।
এদিকে বেগমগঞ্জ থানার ওসি গোলাম ফারুক জানান,কিশোরীকে ধর্ষনের পর খুন ঘটনায় এখানও কেউ মামলা করতে আসেনি। তবে মামলা করলে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।