Photo Sonaimuri 15.03.2016

বেলাল হোছাইন ভূঁইয়া
সোনাইমুড়ী প্রতিনিধি: নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে হিযবুত তাওহীদ ও এলাকাবাসীর মধ্যে সৃষ্ট সোমবারের সংঘর্ষের ঘটনায় ১১৪ জন এজহার নামীয় আসামীসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৪/৫ হাজার লোকের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে ৩টি পৃথক পৃথক মামলা দায়ের করেছে। ঘটনার দিন রাতে ঘটনাস্থল থেকে হিযবুত তাওহীদের ১১৪ জনকে আটক করা হয়েছে। রাতে হিযবুত তাওহীদের কর্মীদের আটক করে থানায় নিয়ে আসার পথে উত্তেজিত জনতা নোয়াখালী-কুমিল্লা সড়কের কয়েক স্থানে ব্যারিকেড দিয়ে প্রায় ৬ ঘন্টা সড়ক অবরোধ করার পর মিছিলসহ থানা অভিমূখে রওনা দিলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

এ সময় বাইপাস রেলগেইট থেকে উত্তেজিত জনতা থানা ও হিযবুত তাওহীদের কর্মীদের বহনকারী গাড়িকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে নোয়াখালী জেলা প্রশাসক বদরে মুনির ফেরদৌস ও নোয়াখালী জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুজ্জামানের নেতৃত্বে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে। এদিকে মঙ্গলবার বেলা ১১ টার দিকে নোয়াখালী-১ (চাটখিল-সোনাইমুড়ী) আসনের সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহিম, উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ারুল হক কামাল, উপজেলা আ’লীগ সভাপতি মমিনুল ইসলাম বাকের,

সোনাইমুড়ী পৌরসভা মেয়র মোতাহের হোসেন মানিক, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আ ফ ম বাবুল (বাবু), উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ড. রহিমা খাতুন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিকারুজ্জামান, সোনাইমুড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ কাজী হানিফুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। একই সময় এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা আ’লীগ সভাপতি মমিনুল ইসলাম বাকেরের সভাপতিত্বে সমাবেশে এমপি এইচ এম ইব্রাহিম জনতাকে আশ্বস্থ করে বলেন, আপনারা কেউ আইন হাতে তুলে নিবেন না। অপরাধী যেই হউক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অযথা নিরাপরাধ কেউ যেন হয়রানীর শিকার না হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখতে পুলিশ প্রশাসনকেও আহ্বান জানান তিনি।

পরে সোনাইমুড়ী উপজেলা কমপ্লেক্স মিলনায়তনে আইন শৃঙ্খলা উন্নতির লক্ষে জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিকদের নিয়ে একটি বিশেষ সভার আয়োজন করে। চাষীরহাট ইউপি চেয়ারম্যান হানিফ মোল্লা জানান, বিগত ২৪ ফেব্রুয়ারী হিযবুত তাওহীদের সদস্যরা এলাকায় সমাবেশ করে ইসলাম ও আলেম ওলামাদের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেয়ায় এ ঘটনার সূত্রপাত হয়। হিযবুত তাওহীদের এক নেতা মঠোফোনে বলেন, সম্পূর্ন বিনা উৎকানিতে ইসলামী আন্দোলন ও হেফাজত কর্মীরা তাদের বাড়ী-ঘরের অতর্কিত হামলা চালায়। এ ঘটনায় তাদের ৩ জন নিহত ও ১০ জন নিখোজ রয়েছে বলে তিনি দাবী করেন। বর্তমানে এলাকার আইন শৃঙ্খলার পরিস্থিতি প্রশাসনের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। ঘনাস্থল ও আশপাশে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবিসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

উল্লেখ্য গত সোমবার সোনাইমুড়ী উপজেলার পোরকরা গ্রামে হিযবুত তাওহীদের সাথে গ্রামবাসীর সংঘর্ষে হিযবুত তাওহীদের ৩ জনসহ ৪ জন নিহত ও পুলিশ, সাংবাদিকসহ দেড় শতাধিক লোক আহত হয়েছে।

নোয়াখালী পুলিশ সুপার ইলিয়াছ শরীফ জানান, এলাকা পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হচ্ছে ঘটনা তদন্ত করে আসামীদেরকে আইনের আওতা আনা হবে।

বেলাল হোছাইন ভূঁইয়া/জিকেআরটি/১৫ মার্চ ২০১৬