11
আব্দুল বারী বাবলু, সুবর্ণচর প্রতিনিধি:
নোয়াখালীর উপকূলীয় উপজেলা সুবর্ণচরে জোরেশোরে চলছে নির্বাচনী প্রচরণা। ভোটের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই প্রার্থীরা গণসংযোগ, কর্মী সভা, উঠান বেঠকে ব্যস্ত সময় পার করছেন। দলীয় নেতা-কর্মী আর সমর্থকদের নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে নিজেকে দলীয় প্রার্থী বলে পরিচয় দিয়ে অসমাপ্ত কাজ সমাপ্তের পাশাপাশি পরিবর্তনের মাধ্যমে চরাঞ্চলে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন প্রার্থীরা।
সরেজমিনে জেলার সুবর্ণচর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, গোটা উপজেলায় পুরোদমে নির্বাচনী আমেজ বিরাজ করছে। বিভিন্ন বাজারে চায়ের দোকানে আড্ডায় সবার মুখে আলোচনার প্রধান বিষয় ভোট। চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে ভোট যুদ্ধে প্রতিদ্বন্ধিতাকারী প্রার্থীদের নিয়ে।
প্রার্থীদের পোস্টারে ছেয়ে গেছে হাট-বাজারসহ গোটা এলাকা। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে নানা ধরনের গান আর শ্লোগান দিয়ে করছে মাইকিং।
একজন ভোটার বলেন, প্রার্থীরা তো ভোট চাইতে শুরু করেছে। তিনি আনারস প্রতীক প্রার্থী যুবলীগ নেতা মহি উদ্দিনকে যাগ্য মনে করলে তার পাশে আরো কয়েকজন ভোটার জানান, তারা যাকে দিয়ে এলাকার উন্নয়ন হবে বিশেষ করে চরের রাস্তাঘাট, শিক্ষাসহ কৃষকের বিভিন্ন ধরেনর সহযোগিতা করবেন তাকেই ভোট দিয়ে চেয়ারম্যান মেম্বার বানাবেন।
ভোটাররা যেমন প্রার্থীদের নিয়ে নানা ধরনের চিন্তা ভাবনা করছেন তেমনি প্রার্থীরাও বসে নেই। ভোটের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে তাদের ব্যস্ততাও বেড়ে যাচ্ছে। ভোর থেকে রাত পর্যন্ত উঠান বৈঠক, কর্মী সভাসহ দলীয় কর্মী সমর্থকদের দিয়ে চরের কাঁচা-পাকা রাস্তা দিয়ে ছুটে যাচ্ছেন ভোটারদের কাছে।
মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনীত প্রার্থী এড. এনামুল হক জানান, তিনি ১৫ বছর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ইতোমধ্যে এলাকার শিক্ষা থেকে শুরু করে অনেক উন্নয়ন করেছেন। তার অসামপ্ত কাজ সমাপ্ত করার জন্য তিনি ভোট চাইছেন। এছাড়া দলীয় প্রতীক নৌকা পাওয়ায় তিনি নিজেকে একজন সৌভাগ্যবান ব্যক্তি বলে দাবি করেন।
এদিকে শক্ত প্রতিদ্ব›িদ্ধ মহি উদ্দিন চৌধুরী সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শংকা প্রকাশ করে বলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান এনামুল হক এলাকার কোন উন্নয়ন করেননি। মোহাম্মদপুর বাসী পরিবর্তন চায়। কাউন্সিলে তিনি সর্বচ্চো ভোট পেলেও তাকে যড়যন্ত্রমূলকভাবে দলীয় মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত করা হয়। তিনি এরাকার সকল মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দিরসহ সকল সামাজিক প্রতিষ্ঠানে অনুদান দিয়ে আসছেন। এসব কারনে তিনি আশাবাদী সুষ্ঠ ভোট হলে তিনি বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন।
তিনি আরও বলেন, তৃণমূলের ভোটাভুটি অগ্রাহ্য করে এনামুর রহমানকে নৌকা প্রতীক দেয়া হয়েছে। তবে এলাকার মানুষ নৌকা, ধানের শীষ বুঝে না। তার বুঝে বিগত সময়ে যে দলের ত্যাগী ছিলেন এবং যাকে দিয়ে এলাকার উন্নয়ন হবে তাকেই তারা ভোট দিবেন।
কথা হয় বিএনপি প্রার্থী খায়রুল আনাম সেলিমের সঙ্গে। তিনিও জানান ভোট সুষ্ঠু হবে কিনা তা নিয়ে তার মতো ভোটারদেরও সংশয় রয়েছে।
সূবর্নচর উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. সাইফুল আলম জানান, ৮ টি ইউনিয়ন নিয়ে এ উপজেলায় মোট ভোটার ১ লাখ ৬২ হাজার ৫৮৩ জন। তার মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮৩ হাজার ২৫৩ এবং নারী ভোটার ৭৯ হাজার ২৮৫ জন। চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২৮ জন। এবং সংরক্ষিত ও সাধারণ পদে ৩৮৩ জন। পাশাপাশি নির্বাচনী আচরনবিধি যাতে ভঙ্গ না হয় সে দিকে কঠিন মনিটরিং করছেন।